Tuesday, December 27, 2016

বাংলা নববর্ষ ‘পহেলা বৈশাখ’, ইংরেজি নববর্ষ ‘থার্টিফাস্ট’ কিংবা হিজরি নববর্ষ '১ম মহরম' পালন করা হারাম।


 আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমতুলল্লাহি ওবারাকাতু
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

বাংলা নববর্ষ ‘পহেলা বৈশাখ’, ইংরেজি নববর্ষ ‘থার্টিফাস্ট’ কিংবা হিজরি নববর্ষ '১ম মহরম' পালন করা হারাম।

ইব্ন কাসির রাহিমাহুল্লাহ বলেন: “কোন মুসলিমের সুযোগ নেই কাফেরদের সামঞ্জস্য গ্রহণ করা, না তাদের ধর্মীয় উৎসবে, না মৌসুমি উৎসবে, না তাদের কোন ইবাদতে। কারণ আল্লাহ তাআলা এ উম্মতকে সর্বশেষ নবী দ্বারা সম্মানিত করেছেন, যাকে পরিপূর্ণ ও সর্বব্যাপী দীন দেয়া হয়েছে। যদি মূসা ইব্ন ইমরান জীবিত থাকত, যার উপর তাওরাত নাযিল হয়েছে; কিংবা ঈসা ইব্ন মারইয়াম জীবিত থাকত, যার উপর ইঞ্জিল নাযিল হয়েছে; তারাও ইসলামের অনুসারী হত। তারাসহ সকল নবী থাকলেও কারো পক্ষে পরিপূর্ণ ও সম্মানিত শরিয়তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকত না। অতএব মহান নবীর আদর্শ ত্যাগ করে আমাদের পক্ষে কীভাবে সম্ভব এমন জাতির অনুসরণ করা, যারা নিজেরা পথভ্রষ্ট, মানুষকে পথ ভ্রষ্টকারী ও সঠিক দীন থেকে বিচ্যুত। তারা বিকৃতি, পরিবর্তন ও অপব্যাখ্যা করে আসমানি ওহির কোন বৈশিষ্ট্য তাদের দীনে অবশিষ্ট রাখেনি। দ্বিতীয়ত তাদের ধর্ম রহিত, রহিত ধর্মের অনুসরণ করা হারাম, তার উপর যত আমল করা হোক আল্লাহ গ্রহণ করবেন না। তাদের ধর্ম ও মানব রচিত ধর্মের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আল্লাহ যাকে চান সঠিক পথের সন্ধান দান করেন”।[15]
প্রিয় পাঠক, নববর্ষ উদযাপন করে আমরা তাদের অনুসরণ করতে পারি না। তারা অভিশপ্ত ও গোমরাহ। এসব তাদের বানানো উৎসব, কুসংস্কার ও পাপ কম। ইহুদিদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
﴿ﻣِّﻦَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫَﺎﺩُﻭﺍْ ﻳُﺤَﺮِّﻓُﻮﻥَ ﭐﻟۡﻜَﻠِﻢَ ﻋَﻦ ﻣَّﻮَﺍﺿِﻌِﻪِۦ ﻭَﻳَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ ﺳَﻤِﻌۡﻨَﺎ ﻭَﻋَﺼَﻴۡﻨَﺎ ﻭَﭐﺳۡﻤَﻊۡ ﻏَﻴۡﺮَ ﻣُﺴۡﻤَﻊٖ ﻭَﺭَٰﻋِﻨَﺎ ﻟَﻴَّۢﺎ ﺑِﺄَﻟۡﺴِﻨَﺘِﻬِﻢۡ ﻭَﻃَﻌۡﻨٗﺎ ﻓِﻲ ﭐﻟﺪِّﻳﻦِۚ ﻭَﻟَﻮۡ ﺃَﻧَّﻬُﻢۡ ﻗَﺎﻟُﻮﺍْ ﺳَﻤِﻌۡﻨَﺎ ﻭَﺃَﻃَﻌۡﻨَﺎ ﻭَﭐﺳۡﻤَﻊۡ ﻭَﭐﻧﻈُﺮۡﻧَﺎ ﻟَﻜَﺎﻥَ ﺧَﻴۡﺮٗﺍ ﻟَّﻬُﻢۡ ﻭَﺃَﻗۡﻮَﻡَ ﻭَﻟَٰﻜِﻦ ﻟَّﻌَﻨَﻬُﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻜُﻔۡﺮِﻫِﻢۡ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺆۡﻣِﻨُﻮﻥَ ﺇِﻟَّﺎ ﻗَﻠِﻴﻠٗﺎ ٤٦﴾ ] ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ : ٤٦ ]
“ইহুদিদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা কালামসমূহকে তার স্থান থেকে পরিবর্তন করে ফেলে এবং বলে, ‘আমরা শুনলাম ও অমান্য করলাম’। আর তুমি শোন না শোনার মত, তারা নিজেদের জিহ্বা বাঁকা করে এবং দীনের প্রতি খোঁচা মেরে বলে, ‘রাইনা’।[16] আর তারা যদি বলত, ‘আমরা শুনলাম ও মান্য করলাম এবং তুমি শোন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য রাখ’ তাহলে এটি হত তাদের জন্য কল্যাণকর ও যথার্থ। কিন্তু তাদের কুফরির কারণে আল্লাহ তাদেরকে লানত করেছেন। তাই তাদের কম সংখ্যক লোকই ঈমান আনে”।[17]
খৃস্টানদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলে:
﴿ﻭَﻣِﻦَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗَﺎﻟُﻮٓﺍْ ﺇِﻧَّﺎ ﻧَﺼَٰﺮَﻯٰٓ ﺃَﺧَﺬۡﻧَﺎ ﻣِﻴﺜَٰﻘَﻬُﻢۡ ﻓَﻨَﺴُﻮﺍْ ﺣَﻈّٗﺎ ﻣِّﻤَّﺎ ﺫُﻛِّﺮُﻭﺍْ ﺑِﻪِۦ ﻓَﺄَﻏۡﺮَﻳۡﻨَﺎ ﺑَﻴۡﻨَﻬُﻢُ ﭐﻟۡﻌَﺪَﺍﻭَﺓَ ﻭَﭐﻟۡﺒَﻐۡﻀَﺎٓﺀَ ﺇِﻟَﻰٰ ﻳَﻮۡﻡِ ﭐﻟۡﻘِﻴَٰﻤَﺔِۚ ﻭَﺳَﻮۡﻑَ ﻳُﻨَﺒِّﺌُﻬُﻢُ ﭐﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻳَﺼۡﻨَﻌُﻮﻥَ ١٤﴾ ] ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ١٤ ]
“আর যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’, আমি তাদের থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। অতঃপর তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল, তারা তার একটি অংশ ভুলে গেছে। ফলে আমি তাদের মধ্যে কেয়ামতের দিন পর্যন্ত শত্রুতা ও ঘৃণা উস্কে দিয়েছি এবং তারা যা করত সে সম্পর্কে অচিরেই আল্লাহ তাদেরকে অবহিত করবেন”।[18]
মুসলিম ভাই, আমরা বিভিন্ন উপলক্ষে যেসব অনুষ্ঠান পালন করি তার অধিকাংশ ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকদের তৈরি। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আমরা আকিকা ত্যাগ করে খাতনার সময় ঘটা করে অনুষ্ঠান করি। খাতনা করা সুন্নত, এতে কোন অনুষ্ঠান নেই, তাতে আমরা অনুষ্ঠান করি, এদিকে আকিকা দেয়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ, অথচ আমরা তাই ত্যাগ করছি। আমরা কি এতটাই নির্বোধ বনে গেলাম! আমরা প্রতিদিন কমপক্ষে সতেরো বার সূরা ফাতেহা পাঠ করে সিরাতে মুস্তাকিমের প্রার্থনা করি, বাস্তবে আমরা যা ত্যাগ করছি, অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথ ও সুন্নত। কমপক্ষে সতেরো বার অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টদের রাস্তা থেকে পানাহ চাই, অথচ বাস্তবে আমরা তাদের অনুসরণ করছি, অর্থাৎ ইহুদি ও খৃস্টানদের পথ। এ কেমন বৈপরীত্য! আমাদের অবচেতনতা যেন পাগলামিকেও হারমানায়।
ইহুদি, খৃস্টান ও মুশরিকরা মুসলিমের শত্রু
নববর্ষ উদযাপন করে আমরা যাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছি, তারা প্রকৃতপক্ষে আমাদের শত্রু। তারা কখনো আমাদের বন্ধু হবে না, যাবত আমরা আমাদের দীন ত্যাগ করে তাদের ধর্মের অনুসরণ না করি। তারা আমাদের দীন ও নবীকে নিয়ে উপহাস করে। ইরশাদ হচ্ছে:
﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﭐﺗَّﺨَﺬُﻭﺍْ ﺩِﻳﻨَﻜُﻢۡ ﻫُﺰُﻭٗﺍ ﻭَﻟَﻌِﺒٗﺎ ﻣِّﻦَ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃُﻭﺗُﻮﺍْ ﭐﻟۡﻜِﺘَٰﺐَ ﻣِﻦ ﻗَﺒۡﻠِﻜُﻢۡ ﻭَﭐﻟۡﻜُﻔَّﺎﺭَ ﺃَﻭۡﻟِﻴَﺎٓﺀَۚ ﻭَﭐﺗَّﻘُﻮﺍْ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢ ﻣُّﺆۡﻣِﻨِﻴﻦَ ٥٧﴾ ] ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٥٧ ]
“হে মুমিনগণ, তোমরা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যারা তোমাদের দীনকে উপহাস ও খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে, তাদের মধ্য থেকে তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে ও কাফিরদেরকে। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক”।[19]
অন্যত্র ঘোষণা দিচ্ছেন, যে তাদের দিকে ধাবিত হবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত। ইরশাদ হচ্ছে:
﴿ﻳَٰٓﺄَﻳُّﻬَﺎ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ ﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺨِﺬُﻭﺍْ ﭐﻟۡﻴَﻬُﻮﺩَ ﻭَﭐﻟﻨَّﺼَٰﺮَﻯٰٓ ﺃَﻭۡﻟِﻴَﺎٓﺀَۘ ﺑَﻌۡﻀُﻬُﻢۡ ﺃَﻭۡﻟِﻴَﺎٓﺀُ ﺑَﻌۡﺾٖۚ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺘَﻮَﻟَّﻬُﻢ ﻣِّﻨﻜُﻢۡ ﻓَﺈِﻧَّﻪُۥ ﻣِﻨۡﻬُﻢۡۗ ﺇِﻥَّ ﭐﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳَﻬۡﺪِﻱ ﭐﻟۡﻘَﻮۡﻡَ ﭐﻟﻈَّٰﻠِﻤِﻴﻦَ ٥١﴾ ] ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ : ٥١ ]
“হে মুমিনগণ, ইহুদি ও নাসারাদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ জালিম কওমকে হিদায়াত দেন না”।[20]
অতএব তাদের ঈদ ও উৎসবে যোগ দেয়া, তাদের সমর্থন জানানো কিংবা কোন ধরণের সহায়তা করা নিজের দীনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।
[15] আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: (২/১৪২)
[16] আরবীতে ‘রাইনা’ শব্দের অর্থ ‘আমাদের তত্ত্বাবধান করুন’। ইহুদিরা শব্দটিকে বিকৃত করে উচ্চারণ করত, যা তাদের ভাষায় (হিব্রুতে) গালি হিসেবে ব্যবহৃত হত।
[17] সূরা নিসা: (৪৬)
[18] সূরা নিসা: (১৪)
[19] সূরা মায়েদা: (১৫৭)
[20] সূরা মায়েদা: (৫১)

Friday, December 23, 2016

(অপবাদের জবাব,প্রশ্নঃ১) ডঃ জাকির নায়েক নাকি বলেছেন আল্লাহকে ব্রাহ্ম বা বিষ্ণু নামে ডাকা যাবে (নাউজুবিল্লাহ)। আসলে কি তাই ?


 আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমতুলল্লাহি ওবারাকাতু
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

(অপবাদের জবাব,প্রশ্নঃ১) ডঃ জাকির নায়েক নাকি বলেছেন আল্লাহকে ব্রাহ্ম বা বিষ্ণু নামে ডাকা যাবে (নাউজুবিল্লাহ)। আসলে কি তাই ?
উত্তরঃ ব্রাহ্ম ও বিষ্ণু এই নামগুল সংস্কৃত নাম। এই ২টি নামই আরবীতে নিলে আল্লাহর ৯৯টি নামের মধ্য হতে ২টি নামের কাছে চলে যায়। যেমনঃ ব্রাহ্ম নামটি আরবীতে নিলে তা অনেকটা ‘খালিক’ নামের মত অর্থ করে। বাংলাতে অর্থ হয় ‘স্রষ্টা’ আর যেহেতু আমরা আল্লাহকে ‘খালিক’ অথবা ‘স্রষ্টা’ নামে ডাকতে পারবো তাই ডাঃ যাকির নায়েক এই কথা বলেছেন। তাহলে যারা আল্লাহকে ‘ব্রাহ্ম’ নামে ডাকতে বলাতে নিন্দা করছেন তারা ‘স্রষ্টা’ নামে ডাকতেও বাধা দেওয়ার দরকার। কারণ হিন্দুরাও তো তাদের দেবতাদের ‘স্রষ্টা’ বলে ডাকে। যেহেতু ‘ব্রাহ্ম’ বলে ডাকা যাবে না সেহেতু ‘স্রষ্টা’ বলেও ডাকা যাবে না কারণ এই ২ টি অর্থ এক। কিন্তু ডাঃ জাকির নায়েক এটিও বলেছেন যদি কেও বলে ‘ব্রাহ্ম’ হল সে যার কয়েকটা হাত আছে,এরকম করে যদি আকার দেওয়া হয় তাহলে আমরা মুসলিমরা আপত্তি জানাবো(লেকচারঃ ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য/প্রধান ধর্ম গুলতে স্রষ্টার ধারনা) কিন্তু একটি জিনিস আমাদের বুঝতে হবে তা হল ডাঃ জাকির নায়েক এসব কথাগুলো হিন্দুদের বলেছেন। তিনি মুসলিমদের এই কথা বলছেন না যে আপনারা ‘খালিক’ নাম বাদে ব্রাহ্ম নামে আল্লাহকে ডাকুন। তিনি শুধুমাত্র ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য দেখিয়েছেন। আমরা আল্লাহকে ‘খালিক’ নামেই ডাকব ‘ব্রাহ্ম’ নামে ডাকব না।

Monday, December 19, 2016

প্রশ্নঃ বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই মূর্তিপূজা করে, তাহলে সবাই কি মিথ্যা ? ইসলাম সত্য হলে বাকি সব ধর্মই কি মিথ্যা ?


 আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমতুলল্লাহি ওবারাকাতু
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

প্রশ্নঃ বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই মূর্তিপূজা করে, তাহলে সবাই কি মিথ্যা ? ইসলাম সত্য হলে বাকি সব ধর্মই কি মিথ্যা ?
ডা. জাকির নায়েক পিসটিভির প্রশ্নোত্তর পর্বে ডা. জাকির নায়েককে প্রশ্ন করা হয়, বিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যা ১৫-২০%। আর অধিকাংশ মানুষই মূর্তিপূজা করে। খ্রীস্টান বৌদ্ধ হিন্দুদের অধিকাংশই মূর্তি পূজা করে। অথচ আপনাদের সংখ্যা মাত্র ২০%। তাহলেও কি সবই ভুল সবই মিথ্যা? উত্তরে ডা. জাকির নায়েক বলেন, ইসলামে সংখ্যাগুরু দিয়ে সত্যকে মাপা যায় না। ইসলাম সবার ওপরে সত্যকে বিশ্বাস করে। কয়েক শ’ বছর আগেও পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করত পৃথিবী সমতল। তাহলে পৃথিবী কি সমতল? না। তাহলে বেশির ভাগ মানুষেরই ভুল হতে পারে। ইসলাম ধর্মে সূরা ইসরার ৮১ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে, ‘বল! সত্য উপস্থিত হয়েছে, মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। মিথ্যা প্রকৃতগত কারণেই বিলুপ্ত হবে।’ আপনি আমেরিকা যান সেখানে দেখবেন অধিকাংশ মানুষ পর্নোগ্রাফিতে বিশ্বাসী। অথচ আপনি এটাকে বিশ্বাস করেন। করেন না। কিন্তু পশ্চিমাবিশ্বের অধিকাংশ মানুষই পর্নোগ্রাফিতে বিশ্বাস করে। তাহলে কি আপনি ভুল বিশ্বাসে আছেন? অবশ্যই না। আল্লাহ তায়ালা চাইলে পৃথিবীর সকল মানুষকে মুসলিম বানাতে পারতেন। তিনি ‘কুন’ (হও) বললেই (ফাইয়াকুন) হয়ে যেত। কিন্তু এ জীবনটা হচ্ছে পরকালের জন্য পরীক্ষা। আল্লাহ যদি চাইতেন পৃথিবীর কোন মানুষ মূর্তি পূজা করবেন না তাহলে তো আর পরীক্ষা থাকল না। পরীক্ষাটা হচ্ছে, আল্লাহ আপনাকে কিছু আইন দিয়েছেন সেটা মানা না মানা আপনার ব্যাপার। আর যে সকল মানুষ মূর্তি পূজা করে তারা তাদের নিজেদের ধর্মই মানছেন না। কারণ কোন ধর্মেই মূর্তিপূজার কথা বলা হয়নি। মানুষই এগুলো বানিয়ে নিয়েছে। হিন্দু ধর্মের ধর্মগ্রন্থ বেদেও মূর্তি পূজার কথা বলা হয়নি। গৌতম বৌদ্ধও কখনো মূর্তি বানাতে বলেননি। খ্রীস্টান ধর্মের ওল্ট স্টেটম্যানেও মূর্তি পূজার কথা বলা হয়নি। তারপরও যদি কেউ মূর্তি পূজা করে তাহলে কি সে সত্য হয়ে গেল? কেউ যদি কাল নবী মুহাম্মদ সা. এর মূর্তি বানিয়ে তাঁর পূজা করে আমি বলব সেটা ভুল। কারণ নবী মুহাম্মদ সা. কখনোই তার মূর্তি বানাতে বলেননি। অতএব কেউ যদি ভুল কাজ করে থাকে সেটা কখনই সত্য হয়ে যায় না। চাই তারা সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু। তাই কেউ কোন ধর্ম মানতে গেল অনুসারীদের দেখবেন না। আমি বলব সে ধর্মের ধর্মগ্রন্থকে দেখুন। কোরআন দেখুন।

Friday, December 9, 2016

প্রশ্ন: কোন মহিলা কি রাষ্ট্রের প্রধান হতে পারেন?


 আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমতুলল্লাহি ওবারাকাতু
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

প্রশ্ন: কোন মহিলা কি রাষ্ট্রের প্রধান হতে পারেন ?.
উওরঃ ডা. জাকির নায়েক ৷ . আমার সীমিত জ্ঞান মতে এরূপ কোন আয়াত কুরআন মাজীদে বিদ্যমান নেই যেখানে বলা হয়েছে একজন নারী কোন দেশের রাষ্ট্রের প্রধান হতে পারবে না ৷ কিন্ত অসংখ্য হাদীসে বর্ণিত আছে যে, . সে জাতি কক্ষনো সফলকাম হবে না, যারা তাদের শাসনভার কোন স্ত্রীলোকের হাতে অর্পণ করে। . [৪৪২৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৮) বইঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ প্রকাশনী), অধ্যায়ঃ ৯২/ ফিতনা হাদীস নং ৭০৯৯ ৷ . কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, এ হাদীসগুলোর সম্পর্ক সে মহিলার সঙ্গে, অর্থাৎ এ নির্দেশ সে নারীর জন্য নির্দিষ্ট, যে পারস্যের শাসনকর্তা ছিল ৷ অবশ্য অন্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত ভিন্ন ৷ তারা ঐ হুকুম সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য মনে করেন ৷ . এবার আসুন পর্যালোচনা করে দেখা যাক ইসলাম ধর্মে একজন মহিলা রাষ্ট প্রধান হতে পারবে কিনা? . যদি কোন নারী আধুনিক সমাজের কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হন, প্রায় দেখা যাবে সে রাষ্ট্রপ্রধান বিভিন্ন মিটিং করছেন অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে ৷ যারা হতে পারে পুরুষ ৷ আর মাঝে মধ্যেই তারা ক্লোজ ডোর মিটিং করে ৷ যেখানে অন্য কেউ ঢুকতে পারে না ৷ যদি একজন মহিলা আরেকজন পুরুষের সাথে ক্লোজ ডোর মিটিং করে ইসলাম এটার অনুমতি দেয় না ৷ ইসলাম বলে যে একজন মহিলা কোন পর পুরুষের সাথে একা থাকতে পারবে না, মিটিং করতে পারবে না ৷ ইসলাম কোন নারীকে গায়রে মাহরাম পুরুষের সঙ্গে একাকী সাক্ষাতের অনুমতি দেয় নি ৷ অনেক সময় তাকে দেশের প্রয়োজনে অন্য দেশের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে ৷ হতে পারে সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান পুরুষ ৷ ইসলাম কিন্ত এরুপ সাক্ষাতের অনুমতি দেয় নি ৷ ইসলাম পুরুষ ও নারীর অবাধ মেলামেশার অনুমতি দেয় না ৷ প্রয়োজনে দেশের প্রধান হিসেবে নারীকে সাধারন সভা সমাবেশেও থাকতে হবে ৷ একজন রাষ্ট্র প্রধানের ছবি বিভিন্ন সময়ে প্রচার করা হয় ৷ তার ছবি তোলা হয়৷ তার ভিডিও তৈরী হয় ৷ খুব কাছ থেকে ক্যামেরা ধরা হয় ৷ সেখানে অন্য রাষ্ট্র প্রধানও থাকতে পারে ৷ অন্য পুরুষ লোকও থাকতে পারে ৷ ঐ ছবিতে সে গায়রে মাহরাম পুরুষের সঙ্গে থাকবে ৷ তখন এই মহিলা রাষ্ট্র প্রধান, হতে পারে সে মার্গারেট থ্যাচার অথবা অন্য যে কেউ ছবিতে দেখবেন অনেক পুরুষের সঙ্গে তারা হ্যান্ডশেক করছেন, তাকে গায়রে মাহরামের সঙ্গে থাকতে হবে ৷ ইসলাম পুরুষ ও নারীর এ ধরনের মেলামেশা কে অনুমতি দেয় না ৷ ৷ রাষ্ট্রপ্রধান মাঝে মধ্যেই দেশের সাধারণ মানুষদের সাথে সাক্ষাৎ করেন ৷ যদি মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান হন তাহলে সাধারণ মানুষের সাথে এভাবে সাক্ষাৎ করা তার জন্য কঠিন হয়ে যাবে ৷ . আর বিজ্ঞান আমাদের বলে যে মহিলাদের ঋজ স্রাবের সময় কালে তাদের মানসিকতা আর ব্যবহারে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায় ৷ কারণ এ সময় তাদের সেক্স হরমন গুলো বের হয়ে যায় ৷ আর তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হলে এই পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে তার সমস্যা হতে পারে ৷ এছাড়াও বিজ্ঞান আমাদের বলে যে মহিলারা তারা পুরুষদের তুলনায় কথা বার্তা বলায় বেশী পারদর্শী ৷ আর পুরুষরা তাদের রয়েছে বিশেষ কিছু মানসিক ক্ষমতা ৷ বিশেষ ক্ষমতা মানে পুরুষরা বেশি কল্পনা করতে পারে ৷ যে ভবিষ্যতে কি হবে ৷ ভবিষ্যতের ঘটনা গুলো কল্পনা করতে পারে ৷ আর রাষ্ট্রপ্রধান হলে এই বিশেষ মানসিক ক্ষমতা গুলোর প্রয়োজন রয়েছে ৷ একজন মহিলা সে একজন পুরুষের চাইতে কথাবার্তা বলায় বেশি পারদর্শী ৷ যেটা একজন মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজন ৷ একজন মহিলা তিনি অন্ত:সত্বা হয়ে যেতে পরেন ৷ তখন তার কয়েক মাস বিশ্রামের প্রয়োজন হয় ৷ সে সময় কে সেই রাষ্ট্রের দেখাশোনা করবে? তার সন্তান থাকতে পারে ৷ মা হিসেবে এই দায়িত্ব টা খুবই ইম্পর্টেন্ট ৷ আর এই কাজটা একজন পুরুষের জন্য সুবিধাজনক কারণ তিনি একই সাথে সন্তানের বাবা আর রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন ৷ কিন্ত একজন মহিলার পক্ষে একই সাথে মা আর রাষ্ট্র প্রধান হওয়াটা সুবিধাজনক নয় ৷ আমিও সেই সব বিশেষজ্ঞদের মতই বলবো মহিলাদের কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হওয়া উচিত নয় ৷ . কিন্ত তার মানে এই না যে মহিলারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বা আইন প্রণয়নে অংশ নিতে পারবেন না ৷ আর আমি আমার লেকচারে আগেও বলেছি যে আইন প্রণয়নে সময় সে অংশ নিতে পারে ৷ তার মতামত দেয়ার অধিকার আছে ৷ আর আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি , হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় উম্মে সালমা (রা:) নবী করিম (সা:) কে উপদেশ দিয়ে যাচ্ছিলেন - যখন সব মুসলমান অস্থিরতার মধ্যে ছিলেন ৷আপনারা জানেন, দেশের প্রধান হয়তো প্রধানমন্ত্রী অথবা রাষ্ট্রপতি হয়, কিন্ত অনেক সময় সচিব বা একান্ত সহায়ক কে সিন্ধান্ত নিতে হয় ৷ তাহলে এভাবে একজন মহিলা দেশের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ৷ এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারে যা সঠিক পথনির্দেশ দেয় ৷ . আশা করি উওরটা পেয়েছেন ৷